গাজী নাসিফুল হাসান: একটি শিরোপা জয় অনেকদিনের স্বপ্ন পিএসজির। না যেন তেন শিরোপা নয়। পিএসজির লক্ষ্য ছিলো একটাই ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ তথা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা। ২০১২ সালে পিএসজির মালিকানা পুরোপুরি কিনে নেয় কাতারি ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট। তারা দায়িত্ব নেবার পর ফ্রেঞ্চ লিগকে একরকম ব্যক্তিগত সম্পত্তি বানিয়ে ফেলেছে। তবে পিএসজির মালিক নাসের আল খেলাইফি পিএসজির দায়িত্ব নেবার পর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ চ্যাম্পিয়ন হবার জন্য।
একটিই লক্ষ্য চ্যাম্পিয়নস লীগ জেতা। এর জন্য পিএসজির মালিক নাসের আল খেলাইফি পানির মতো টাকা ঢালছেন। তবে এই অজস্র টাকা ঢেলেই বা কি লাভ হলো? স্বপ্নপূরণের একবারে দ্বারপ্রান্তে এসে ব্যর্থ হতে হলো পিএসজির। বায়ার্নের গতিময় ফুটবলের সামনে একরকম অসহায় হয়ে পড়েছিলো হাজার কোটি টাকা দিয়ে গড়া নেইমার এমবাপ্পেদের পিএসজির।
২০১১ সাল থেকেই মূলত কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট পিএসজিকে পরিচালনা করতে থাকে। তবে ২০১২ সালের তারা একক মালিক হিসেবে পিএসজিকে পরিচালনা করতে শুরু করে। এবার একটা হিসাব দেখানো যাক। পিএসজির স্বপ্নের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার জন্য সেই ২০১২ থেকে গতকালকের ফাইনাল অবধি যে টাকা ব্যয় করেছেন নাসের আল খেলাইফি তার শুনলে চোখ কপালে উঠে যাবে। তারা মোট ১২৫৬ বিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে যা বাংলাদেশী টাকায় দাঁড়ায় ১২ হাজার ৫৪৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
পিএসজির এই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা এমন এক স্বপ্ন ছিলো যার জন্য তারা ইউরোপীয়ান ফুটবল তথা উয়েফার এবং ফিফার যে ফাইনান্সিয়াল ফ্লেয়ার পরলে রয়েছে সেটাও তোয়াক্কা করেনি। তারা শুরুতে থিয়াগো সিলভা, ইব্রাহিমোভিচ, কাভানি, ডি মারিয়াদের কিনে। পরবর্তীতে তারা নেইমারকে কিনতে উঠে পড়ে লাগে। যার ফলস্বরূপ নেইমারকে বার্সেলোনা থেকে ২২২ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে কিনে আনে পিএসজিতে। পরে মোনাকো থেকে এমবাপ্পেকে কিনে আনে ১৮০ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে। এই কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে গত ৮ বছরে ৭টি ফ্রেঞ্চ লিগ শিরোপা, ৫টি কোপা ডি ফ্রান্স শিরোপা, ৬টি কোপা ডি লা লিগা ও ৭টি ট্রফি ডাস শিরোপা জিতে নেয়। তবে শুধু চ্যাম্পিয়নস লীগ জেতা বাকি ছিলো।
পিএসজি যেভাবে টাকা ঢেলেছে এরপর এই ব্যর্থতা প্রমাণ করে টাকা ঢাললেই শিরোপা এত সহজ নয়। পিএসজির মালিক নাসের আল খেলাইফি যে পিএসজির জন্য ১২ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট তৈরি করেছিলো তা বায়ার্নের গতির কাছে হেরে গেলো। এখন আপনারা ভাবতেই পারেন একবার ব্যর্থ হয়েছে তো কি হয়েছে আবার পিএসজি চেষ্টা করবেই। একটু বলে রাখা ভালো সুযোগ বারবার আসে না।